ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় সাক্ষী হওয়াতে চাকরি গেল ইমামের
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা করার মামলায় সাক্ষী হওয়ায় বড়বাড়ি বাজার জামে মসজিদের ইমাম’কে চাকরীচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৮ অক্টোবর) ন্যায় বিচারের দাবিতে চাকরী হারানো ইমাম মোহিদুল ইসলাম হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত মাহাবুব আলম জেলার সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি এলাকার মৃত কাদের আলীর ছেলে এবং বড়বাড়ি বাজার জামে মসজিদের জমি দাতা। অন্যদিকে চাকরীচ্যুত ইমাম মোহিদুল ইসলাম একই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে।
অভিযোগে চাকরীচ্যুত ইমাম মোহিদুল ইসলাম জানান, একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় সাক্ষী হিসেবে তার নাম উল্লেখ থাকায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার ইমাম পদ বাতিল করেছে জমিদাতা মাহাবুব আলম। অথচ মসজিদ কমিটির কোন পদের দায়িত্বে নেই তিনি।
চাকরিচ্যুত ইমাম মৌহিদুল আরও বলেন, গত দেড় মাস আগে আমার বড় ভাই জীবিকার তাগিদে শরীয়তপুরে কাজে যায়। এদিকে তিন সন্তানকে নিয়ে আমার ভাবি বাড়িতে একাই থাকতো আর এ সুযোগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মধ্যে রাতে প্রতিবেশী ভোগোম উদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাবির ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
পরে তার চিৎকার শুনে আমরা ছুটে গেলে কৌশলে পালিয়ে যায় ফারুক। এদিকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় আমার ভাবি বাদী হয়ে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করলে সেখানে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আমাকে সাক্ষী করা হয়। মামলা হওয়ার পরদিন থেকেই ফারুক নামের ওই ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে মাহবুব আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চালাতে থাকে এক পর্যায়ে জমিদাতা হিসেবে প্রভাব দেখিয়ে আমার চাকুরী হরণ করেন।
তবে স্থানীয়দের দাবি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি দান করে ও কর্তৃত্ব খাটিয়ে নিরপরাধ ইমামকে চাকরীচ্যুত করা নিয়ম বহির্ভূত ঘটনা।
এদিকে মসজিদের ইমামের চাকরিচ্যুত করার অভিযুক্ত মাহাবুব আলমের সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জানান, ইমামের তেলাওয়াতে ভুল থাকায় ওই ইমামকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। তবে ধর্ষণের চেষ্টার দায়ে মামলার আসামী ফারুক হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ফারুক হোসেন এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। সে নারী লোভী ও উচ্ছৃঙ্খল চরিত্রের স্বভাবের তার অত্যাচারে এলাকার নারীরা আতঙ্কিত। সে নারীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন প্রকার অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে চলেন তার বিরুদ্ধে একাধিক বার গ্রাম্য সালিশও হয়েছে। সম্প্রতি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর তার বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর ভিত্তিতে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
আরও পড়ুনঃ
মাদরাসার শিক্ষকের কাছে ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থী
প্রেমে সাড়া না পেয়ে নিজের গলায় ছুরিকাঘাত
হাসপাতালে গৃহবধূর লাশ ফেলে পালিয়েছেন স্বামী
এ বিষয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েযূ নূর-ই আলম বলেন, মসজিদের ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় মসজিদের ইমাম সাক্ষী হওয়ার অভিযোগে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে এমন অভিযোগ পেয়েছি এবং ফারুকে বিরুদ্ধ ধর্ষণের চেষ্টার মামলা চলমান রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিএম
মন্তব্য করুন